প্রশ্নঃ স্বৈরাচারী,প্রতারক
বিশ্বাসঘাতক ইহুদীদের (আল্লাহ্ তাঁদের ধ্বংস করুক) বিরুদ্ধে সংগ্রামরত
ফিলিস্তিনী মা বোনদের করুন অবস্থা আমাদের ব্যথিত করবে না তা কি করে হয়?
পবিত্র ভূমির এই সব মা বোনদের ওপর নিয়মিত চলছে অত্যাচার, নির্যাতনের স্টীম
রোলার । এতকিছুর পরেও ইসলাম ও মুসলিমদের চিরশত্রু ইহুদীদের বিরুদ্ধে
যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনে তাঁদের উপস্থিতি যেমন সরব, তেমনি তাঁরা এমন একটা
প্রজন্ম গড়ে তুলছেন যারা জানে কিভাবে অস্ত্র দিয়ে অত্যাচারের জবাব দিতে
হয় । নির্যাতিত এইসব মা বোনদের প্রতি আমাদের কি কোন কর্তব্য নেই ? কিভাবে
আমাদের সবটুকু সীমাবদ্ধতা স্বীকার করে নিয়ে আমরা তাঁদের পাশে দাঁড়াবো,
কিভাবে তাঁদের সাহায্য করব ? এবং মহিমান্বিত আল্লাহই একমাত্র সাহায্যকারী
.........
উত্তরঃ মুসলিম জাতি আজ জমীনের বুকে সর্বত্র নির্যাতিত, নিপীড়িত । দৈহিক দুর্বলতা,সন্তান লালন পালন, ঘরদোর সামলানোর চাপ বিভিন্ন কারনে মুসলিম পুরুষদের তুলনায় মুসলিম নারীদেরই নির্যাতনের ধকল বেশী সহ্য করতে হয় । এই বিরুদ্ধ প্রতিকূল পরিবেশে মুসলিম নারীদের মুসলিম পুরুষদের মত সংগ্রাম করে টিকে থাকাটা দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়ায় । আল্লাহ্ মুসলিম নারীদের এই কষ্ট এবং ধৈর্যের যথাযথ বিনিময় প্রদান করুক ।
সমগ্র মুসলিম উম্মাহ একটা দেহের মতো । দেহের কোন অংশে ব্যাথা হলে সমগ্র দেহ যেমন সে ব্যাথা অনুভব করে তেমনি বিশ্বের কোন প্রান্তে কোন মুসলিম নির্যাতিত হলে,অত্যাচারিত হলে সেই নির্যাতন, অত্যাচারের ব্যাথা আমাদেরও অনুভব করতে হবে যদি আমরা সত্যিকারের ঈমানদার হই । ফিলিস্তিনে যে শিশু ইহুদীদের বোমার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়েছে সেই শিশুর মায়ের কান্না যদি না শুনতে চাই , যে নারী তাঁর স্বামীকে নিজের চোখের সামনে দেখেছে ট্যাংকের গোলায় শহীদ হতে তাঁর কষ্ট যদি অনুভব করতে না পারি , যে ভাই তাঁর বোনকে হারিয়েছে, যে বোন তাঁর ভাইকে হারিয়েছে তাঁদের দুঃখ কষ্ট আমরা যদি নাই অনুভব করতে পারি তাহলে কিসের মুসলিম আমরা? মুসলিমরা কি পরস্পর ভাই ভাই নয়?
উত্তরঃ মুসলিম জাতি আজ জমীনের বুকে সর্বত্র নির্যাতিত, নিপীড়িত । দৈহিক দুর্বলতা,সন্তান লালন পালন, ঘরদোর সামলানোর চাপ বিভিন্ন কারনে মুসলিম পুরুষদের তুলনায় মুসলিম নারীদেরই নির্যাতনের ধকল বেশী সহ্য করতে হয় । এই বিরুদ্ধ প্রতিকূল পরিবেশে মুসলিম নারীদের মুসলিম পুরুষদের মত সংগ্রাম করে টিকে থাকাটা দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়ায় । আল্লাহ্ মুসলিম নারীদের এই কষ্ট এবং ধৈর্যের যথাযথ বিনিময় প্রদান করুক ।
সমগ্র মুসলিম উম্মাহ একটা দেহের মতো । দেহের কোন অংশে ব্যাথা হলে সমগ্র দেহ যেমন সে ব্যাথা অনুভব করে তেমনি বিশ্বের কোন প্রান্তে কোন মুসলিম নির্যাতিত হলে,অত্যাচারিত হলে সেই নির্যাতন, অত্যাচারের ব্যাথা আমাদেরও অনুভব করতে হবে যদি আমরা সত্যিকারের ঈমানদার হই । ফিলিস্তিনে যে শিশু ইহুদীদের বোমার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়েছে সেই শিশুর মায়ের কান্না যদি না শুনতে চাই , যে নারী তাঁর স্বামীকে নিজের চোখের সামনে দেখেছে ট্যাংকের গোলায় শহীদ হতে তাঁর কষ্ট যদি অনুভব করতে না পারি , যে ভাই তাঁর বোনকে হারিয়েছে, যে বোন তাঁর ভাইকে হারিয়েছে তাঁদের দুঃখ কষ্ট আমরা যদি নাই অনুভব করতে পারি তাহলে কিসের মুসলিম আমরা? মুসলিমরা কি পরস্পর ভাই ভাই নয়?
যে
নেকড়ে আজ সাদা ষাঁড় খেয়েছে সেই আগামীকাল লাল ষাঁড় খাবে, তার পরদিন
কালোটা । একে একে সে সবটাই সাবাড় করে ফেলবে । আসলে আমাদের মুসলিম উম্মাহর
শত্রু একটাই । যে আজ ফিলিস্তিনে আঘাত হেনেছে সেই আগামীকাল আপনার ঘরে বিমান
থেকে বোমা ফেলবে , ড্রোন পাঠাবে আপনাকে হত্যার জন্য । আমাদের শত্রু চায়
আমরা আমাদের নিজেদের জীবন নিয়েই ব্যস্ত হয়ে থাকি, অর্থ বিত্তের পিছনে
ছুটেই জীবন কাটিয়ে দেই । তাদের ফাঁদে পা দিলে চলবে না । শত্রুর গ্লোবাল পীচ, মানবতা এইসব মিষ্টি কথায় ভুলে ঘরে চুপচাপ বসে থাকার দিন শেষ, এখন
সময় ঘুরে দাঁড়ানোর ।
আমাদের
সমাজের কিছু মানুষ আছে যারা সারা জীবন শুধু অর্থের পেছনেই ছুটে চলে আর
কিছু মানুষ আছে যারা অত্যন্ত অলস এবং নিজেদের খায়েশ পূরনেই সর্বদা ব্যস্ত ।
এই দুইরকম জীবন যাপনেই অভ্যস্ত মানুষ গুলো খুব ভয়াবহ পরিনতির অপেক্ষায়
আছে ।এবং এরকম জীবন দর্শন মুসলিম ভাই-বোনদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব পালনে
অলসতা তৈরি করে, আমাদের উদাসীন করে রাখে ।
বলুন,
আজ কোথায় মুসলিম জাতি বিশেষ করে মুসলিম মা বোনেরা ভয়াবহ নির্যাতনের
শিকার হচ্ছে না ? ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান,কাশ্মীর,
ইরাক,সিরিয়া,ফিলিপাইন,ইরিত্রিয়া,সোমালিয়া, চেচনিয়া, বসনিয়া দিন দিন
তালিকা শুধু লম্বা হচ্ছে । এমনকি অনেক তথাকথিত “উদার”, “গনত্বান্ত্রিক”
দেশও মুসলিমদের নির্যাতন করার ক্ষেত্রে খুব একটি পিছিয়ে নেই । ফ্রান্সের
কথাই ধরুন না , যাদের সভ্যতা, গনত্বন্ত্র,ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশংসায় কিছু
বুদ্ধিজীবি, সুশীল পঞ্চমুখ, প্যারিসের সহনশীলতা, মানবাধিকার, মতপ্রকাশের
স্বাধীনতা প্রবাদতুল্য । কিন্তু এই “মহান,উদার, মানবাধিকার রক্ষায়
অগ্রগামী ফ্রান্সও মুসলিম নারীদের হিজাব পড়ার অধিকার ক্ষুন্ন করতে দ্বিধা
বোধ করে না । তাদের তথাকথিত সহনশীলতা এই পর্যায়ের যে তারা মুসলিম নারীদের
মাথার সামান্য একটা কাপড়ের টুকরা পর্যন্ত সহ্য করতে পারে না । এই তাদের
মানবাধিকার রক্ষার নমুনা ! এই তাদের সভ্যতা !
প্রকৃতপক্ষে
এইসব অত্যাচার নির্যাতনের মাধ্যমে আল্লাহ্ (সুবঃ) মুসলিম উম্মাহকে
পরীক্ষা করছেন এবং তিনি এইসব পরীক্ষার মাধ্যমেই মুসলিম উম্মাহর ইজ্জত
বাড়িয়ে দেবেন । তবে শুধু চোখের জল বা শোক প্রকাশ আমাদের এই পরীক্ষায়
উত্তীর্ণ করতে পারবেনা । পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে আমাদের বাস্তব
সম্মতভাবে আগাতে হবে । যেসকল মুসলিম বোনেরা চাকুরী করেন বা যাদের পরিবারে
আল্লাহ্ (সুবঃ) বেশ স্বচ্ছলতা দিয়েছেন, তাঁদের উচিত কমপক্ষে একটি করে
ফিলিস্তিনী পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করা । ফিলিস্তিনে রিলিফ পাঠাতে
পারেন, ধর্মীয় বইপুস্তক,সিডি পাঠাতে পারেন , এমনকি বোরখাও পাঠাতে পারেন ।
জানলে হয়তো অবাক হবেন সেখানে আপনার অনেক মুসলিম বোন আছেন যারা শুধুমাত্র
কাপড়ের অভাবে হিজাব করতে পারেন না ।
আমাদের
দেশের যেসব পরিবারের রিজিক আল্লাহ্ (সুবঃ) তা’আলা প্রশস্ত করেছেন
(আলহামদুলিল্লাহ্) তাদের উচিত কমপক্ষে একজন ফিলিস্তিনী পরিবার, অন্তত
একজন ফিলিস্তিনী শিশুকে ভরণপোষণের ব্যায় বহন করা । আমার বোনেরা, একবার
ফিলিস্তিনী এবং ইরাকী বোনদের দিকে তাকিয়ে দেখুন তাঁরা একিসাথে কেমন
স্নেহময়ী মা, ধৈর্যশীল মুসলিমা, প্রতিরোধ যুদ্ধের দুর্ধর্ষ গেরিলা । এই
সকল মুসলিম মা বোনদের বাড়ীঘর গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, তাদেরকে খোলা আকাশের
নিচে আশ্রয় নিতে বাধ্য করা হচ্ছে, ভয়াবহ নির্যাতন করা হচ্ছে, হত্যা
করা হচ্ছে তারপরেও তাঁরা ঘরে ঘরে প্রতিরোধ যুদ্ধের বীর যোদ্ধা তৈরি করে
চলেছেন । কুফফারদের অত্যাচার নির্যাতন তাঁদের এতটুকুও দমাতে পারেনি,
তাঁদেরকে দ্বীন ইসলাম থেকে একচুলও নড়াতে পারেনি । বছরের পর বছর ধরে চলা
তাঁদের এই প্রতিরোধ যুদ্ধ এটাই প্রমাণ করে যে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের
দ্বীন এই পৃথিবীতে একদিন অবশ্যই সকল বিধানের উপর জয়ী হবে । আল্লাহ্
কুফফারদের শাস্তি দিবেন এবং মুমিনদের অন্তর শান্ত করবেন । আমরা ঈমানের উপর
যত দৃঢ় থাকব, কুফফারদের অন্তরে তত ভীতির সৃষ্টি হবে ।
আল্লাহ্
(সুবঃ) ইহুদীবাদী ইজরাইলকে ধ্বংস করুক,ইজরাইলকে টুকরো টুকরো করে ফেলুক।
আল্লাহ্ (সুবঃ)আমাদের তৌফিক দিক ফিলিস্তিনের পবিত্রভূমি মুমিনদের জন্য
মুক্ত করার । (আমীন)
সুতরাং,
হে আমার মুসলিম বোনেরা আসুন আমরা প্রত্যেকেই একজন ফিলিস্তিনী পরিবার,
অন্তত একজন ফিলিস্তিনী শিশুর দায়িত্ব নিজের কাধে তুলে নেই ।
আলহামদুলিল্লাহ্ একজন মুসলিম শিশু লালন পালন করতে খুব বেশী অর্থের
প্রয়োজন পড়ে না । এই ধুরুন বছরে ৩০-৩২ হাজার টাকা । এটাও মনে রাখা
জরুরী, এই টাকা প্রদান করলেই আমাদের সব দায়িত্ব কর্তব্য শেষ হয়ে যাবে না ।
বরং আমাদের অনেক অনেক দায়িত্ব কর্তব্যের মধ্যে কেবল একটি দায়িত্বই পালন
করা হবে । এই আর্থিক সাহায্য প্রদানের মাধ্যমে আমরা ফিলিস্তিনের অসহায়
শিশুগুলোকে একটু মানসম্মত জীবনের মুখ দেখাতে পারব , তাদের কুর’আন অধ্যায়নে
সহায়তা করতে পারব ইনশা আল্লাহ্ । আল্লাহ্ (সুবঃ) তাদের উপর রহম করুক,
তাদের জীবনকে সহজ করুক ।এবং আল্লাহ্ই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী ....
মূল লেখাঃ ড. সাফার আলহাওয়ালি
অনুবাদঃ আল মালহামা অনুবাদক টিম কতৃক অনূদিত
মূল লেখার ইংরেজি ভার্সনঃ http://iskandrani.wordpress.com/2009/01/02/what-our-sisters-can-do-for-palestine/