পৃষ্ঠাসমূহ

ইসলামঃ সত্য, সদগুণ এবং সৌন্দর্য



বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম


সত্য, সদগুণ ও সৌন্দর্যের নীতি ইসলামে এদের অর্থ কি এবং কিভাবে এদের প্রাত্যহিক জীবনে অন্তর্ভুক্ত করে তোলা যায়।

নিশ্চিতভাবেই ইসলাম পরম সত্য, সদগুণ ও সৌন্দর্যের দ্বীন। অন্যান্য ধর্মসমূহ কিংবা জীবনদর্শনগুলোতেও হয়তো বা এইসব নীতি অন্তর্ভুক্ত আছে তবে কোনটিতেই সেগুলোকে ইসলামের মত এত সুন্দরভাবে সহাবস্থান করতে দেখা যায় না।

বিভিন্ন শিক্ষা বা সাহিত্যে মনোহর ভাষা ব্যবহার করে মিথ্যা দাবী করতে দেখা যায়, সচ্চরিত্রকে ছোট করতে দেখা যায় কিংবা বিভিন্ন সময়ে পাপাচারকে উতসাহিত করতেও দেখা যায়। তবে আমাদের দ্বীনে ব্যাপারটি তা নয়। ইসলামে দ্বীনের প্রচারের ক্ষেত্রে এই তিনটি নীতি সর্বদা কাজ করছে।


দ্বীন ইসলাম আমাদের আমন্ত্রণ জানায় আল্লাহ তা’আলার ইবাদাত করতে, যিনি পরম সত্য, সচ্চরিত্র ও সৌন্দর্যে, যিনি এই মহাবিশ্বের সবকিছুর স্রষ্টা। আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও সত্য ও সদগুণের শ্রেষ্ঠ প্রকাশ।  সূরা ক্বালামের ৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তা’আলা রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনি সুনিশ্চিতভাবেই মহান চরিত্রের অধিকারী” উনার স্ত্রী উনার ব্যাপারে বলেন, “কুর’আন ছিল উনার নৈতিক ভিত্তি আহমাদ বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন সৎ, বিশ্বাসী, ন্যায়নিষ্ঠ, দানশীল, দয়ালু, সাহসী, ধৈর্যশীল ও সত্যের প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।  এর জন্য যতই কষ্ট বা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ুক না কেন, তিনি পিছু হটতেন না। তিনি বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীন উভয় দিক থেকেই অত্যন্ত সুন্দর ছিলেন। তাঁর কথা ছিল অত্যন্ত সুমধুর। তিনি এমন একজন পুরুষ ছিলেন যাঁর গুণাবলী সর্বদা সম্মানের দাবী রাখত।

ইসলামের মহান কিতাব যা আল্লাহ কর্তৃক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর প্রেরিত, ইসলামের মহান সেই কিতাবও সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত। এটা আমাদের কাছ থেকে সদগুণ দাবী করে এবং তা করে এক অতুলনীয় ভাষায়। নিম্নোক্ত আয়াতগুলোতে প্রকাশিত হয় যে কুর’আনের উদ্দেশ্যও এটাই-


সূরা আল ঈসরা, আয়াত ১০৫: আমি সত্যসহ এ কোরআন নাযিল করেছি এবং সত্য সহ এটা নাযিল হয়েছে

সূরা আল বাকারা, আয়াত ১-: আলিফ লাম মীম এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য

সূরা ফুসসিলাত, আয়াত ৪২: এতে মিথ্যার প্রভাব নেই, সামনের দিক থেকেও নেই এবং পেছন দিক থেকেও নেই এটা প্রজ্ঞাময়, প্রশংসিত আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ

সূরা আল ঈসরা আয়াত ৯: এই কোরআন এমন পথ প্রদর্শন করে, যা সর্বাধিক সরল এবং সৎকর্ম পরায়ণ মুমিনদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্যে মহা পুরস্কার রয়েছে.

সূরা আল আন’আম আয়াত১১৫: আপনার প্রতিপালকের বাক্য পূর্ণ সত্য ও সুষম তাঁর বাক্যের কোন পরিবর্তনকারী নেই তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী

সূরা আয-যুমার, আয়াত ২৩: আল্লাহ উত্তম বাণী তথা কিতাব নাযিল করেছেন, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ, পূনঃ পূনঃ পঠিত এতে তাদের লোম কাঁটা দিয়ে উঠে চামড়ার উপর, যারা তাদের পালনকর্তাকে ভয় করে, এরপর তাদের চামড়া ও অন্তর আল্লাহর স্মরণে বিনম্র হয়

কুর'আন অন্য কোনো কিতাবের ন্যায় নয়, যেগুলোর উৎস হতে পারে অজানা, অনুবাদ ও অর্থে থাকতে পারে সংশয়। এই পবিত্র কিতাবের মাধ্যমে তিনটি নীতি- সত্য, সদগুণ ও সৌন্দর্য, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা’আলা এবং তাঁর রাসুল (সঃ) এর অস্তিত্বের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে সুতরাং এই তিনটি নীতিকে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের প্রত্যেকটি কাজের সাথে জড়িয়ে নেয়া উচিৎ, কেননা এগুলো একটি আরেকটির পরিপূরক।

সত্য,সদগুণ ও সৌন্দর্য ইসলামের সাথে এতটাই ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত যে কুর'আন ও সুন্নাহতে আমরা প্রায়শই একটিকে আর একটির ব্যাখ্যারূপে খুঁজে পাই। উদাহরণস্বরূপ সূরা ইউসুফে সদগুণকে সৌন্দর্যরূপে বর্ণনা করা হয়েছে। সূরা ইউসুফের আয়াত ১৮ তে বলা হয়েছে, সুতরাং এখন সবর করাই শ্রেয় তোমরা যা বর্ণনা করছ, সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহই আমার সাহায্য স্থল"
সূরা আল মা' রিজের আয়াত ৫ এ বর্ণনা করা হয়েছে, "অতএব, আপনি উত্তম সবর করুন"
সূরা আল মু'মিনুন, আয়াত ৯৬,"মন্দের জওয়াবে তাই বলুন, যা উত্তমঃ
সূরা আল বাকারা, আয়াত ৮৩ ''মানুষকে সৎ কথাবার্তা বলবে''
সূরা আন নাহল , আয়াত ১২৫ "আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহবান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উপদেশ শুনিয়ে উত্তমরূপে "

ব্যাবহারিক বিভিন্ন ব্যাপার, যা মানুষ সচরাচর সুন্দর হিসেবে গণ্য করে না, ইসলাম সেগুলোর সৌন্দর্য্যকেও প্রশংসা করতে উতসাহিত করে উদাহরণস্বরূপ সূরা আন নাহলের আয়াত ৫ -৭ এ বলা হয়েছে,


"চতুষ্পদ জন্তুকে তিনি সৃষ্টি করেছেন। এতে তোমাদের জন্যে শীত বস্ত্রের উপকরণ আছে। আর অনেক উপকার হয়েছে এবং কিছু সংখ্যককে তোমরা আহার্য্যে পরিণত করে থাক।এদের দ্বারা তোমাদের সম্মান হয়, যখন বিকালে চারণভূমি থেকে নিয়ে আস এবং সকালে চারণ ভূমিতে নিয়ে যাও।এরা তোমাদের বোঝা এমন শহর পর্যন্ত বহন করে নিয়ে যায়, যেখানে তোমরা প্রাণান্তকর পরিশ্রম ব্যতীত পৌছাতে পারতে না। নিশ্চয় তোমাদের প্রভু অত্যন্ত দয়াদ্র, পরম দয়ালু।"

সূরা আল বাকারার আয়াত ৬৯ এ বলা হয়েছে, "তারা বলল, তোমার পালনকর্তার কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা কর যে, তার রঙ কিরূপ হবে?" এবং সূরা আন নামল, আয়াত ৬০ এ বলা হয়েছে, "বল তো কে সৃষ্টি করেছেন নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল এবং আকাশ থেকে তোমাদের জন্যে বর্ষণ করেছেন পানি; অতঃপর তা দ্বারা আমি মনোরম বাগান সৃষ্টি করেছি তার বৃক্ষাদি উৎপন্ন করার শক্তিই তোমাদের নেই অতএব, আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য আছে কি? বরং তারা সত্যবিচ্যুত সম্প্রদায়"

সূরা আল আন'আম এর ৯৯ নম্বর আয়াতে সৌন্দর্যকে উৎসাহিত এবং ফলমূল এবং এর বৃদ্ধিকে মূল্যায়ন করার কথা বলা হয়েছে।  “ বিভিন্ন গাছের ফলের প্রতি লক্ষ্য কর যখন সেুগুলো ফলন্ত হয় এবং তার পরিপক্কতার প্রতি লক্ষ্য কর নিশ্চয় এ গুলোতে নিদর্শন রয়েছে ঈমানদারদের জন্যে" এখানে আমাদের আল্লাহ্‌র সৃষ্টি সমূহের সৌন্দর্যের মধ্যে তাঁর নিদর্শন এবং মানুষের জন্য এর উপকারিতা পরিলক্ষন করতে বলা হয়েছে। একই সূরার ১৪১ নম্বর আয়াত আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, ফলের প্রতি দৃষ্টিগোচর করতে, সৌন্দর্যকে উতসাহিত করতে এবং এর ঋণ পরিশোধ করতে। “এগুলোর ফল খাও, যখন ফলন্ত হয় এবং হক দান কর কর্তনের সময়ে "

স্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের ধর্ম পুরুষদের সৌন্দর্য এবং সদগুণ দুটোকেই প্রাধান্য দিতে নির্দেশ দেয়। 


''সে যখন স্ত্রীর প্রতি দৃষ্টিপাত করে তখন সন্তুষ্ট হয়। যখন সে স্ত্রীকে কোন আদেশ দেয় সে তা পালন করে এবং সে যখন দূরে যায় তখন সেই স্ত্রী সৎ থাকে এবং স্বামীর আমানতের হেফাজত করে '' (ইবনে মাজাহ)

ইসলামে সত্য, সদগুণ এবং সৌন্দর্য একে অপরকে শুধুমাত্র বর্ণনাই করে না, বরং এরা সব সময় একে অপরের সম্পূরক এবং সহায়ক হিসেবে কাজ করে। সদগুণাবলী শুধুমাত্র সত্যের ভিত্তিতেই তৈরি হতে পারে এবং মানুষ এখানে গ্রহণযোগ্যতা(সৌন্দর্য)খুঁজে পায়। কুর'আনের কাহিনী শুধুমাত্র এর বিষয়বস্তু এবং রচনাশৈলীতেই ব্যাতিক্রম নয় বরং এটি বর্ণনা করে মানুষের বাস্তব জীবন এবং ঘটনাসমূহকে। কুর'আনের নীতি এবং জ্ঞান আমাদের শেখায় এটি অলীক কাহিনীর চেয়ে অনেক বেশী প্রাসঙ্গিক সূরা ইউসুফ, আয়াত ৩, "আমি তোমার নিকট সর্বোত্তম কাহিনী বর্ণনা করছি

যদি মানুষ শুধুমাত্র ভাল অভিব্যাক্তি এবং শব্দের দ্বারা সদগুণ এবং সত্যের জন্য ইসলামের ডাক শুনত তাহলে তাদের হৃদয় উষ্ণ হয়ে উঠত এবং কান আহ্বানে সাড়া দিত। সূরা আল বাকারা, আয়াত ৮৩, "মানুষকে সৎ কথাবার্তা বলবে" ‘আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহবান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উপদেশ শুনিয়ে উত্তমরূপে এবং তাদের সাথে বিতর্ক করুন পছন্দ যুক্ত পন্থায় (১৬:১২৫)

কিছু মানুষ যারা আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসুল (সঃ) এর সদগুণ এবং সত্য প্রকাশের রাস্তায় বিরুদ্ধচারন করতে গিয়ে আত্তীকরণ করেছিল চরম অসন্তোষ, কঠোর ও নির্বুদ্ধিতার পন্থা,আল্লাহ্‌ তাদের ক্ষমা করুন।

পরিণতিসরূপ মানুষ ইসলামের ডাকে সাড়া দেয়ার পরিবর্তে সেখান থেকে দূরে সরে যেতে লাগল।এই মানুষেরা কি একবারও আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসুল (সঃ) এর কথা স্মরণ করেনি? সূরা আল ইমরানের ১৫৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, 


"আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের জন্য কোমল হৃদয় হয়েছেন পক্ষান্তরে আপনি যদি রাগ ও কঠিন হৃদয় হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতো কাজেই আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য মাগফেরাত কামনা করুন এবং কাজে কর্মে তাদের পরামর্শ গ্রহণ করুন "

যেন আল্লাহ তা’আলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলছেন যে, যদি রাসুল (সঃ) সদগুণ ও সত্যের প্রচারণায় কঠোর এবং অসহনশীল হতেন তাহলে তাঁর সাথের মানুষজন সেখান থেকে চলে যেত।  তাঁরা কেন এমন করতেন? কারণ ওনারা ছিলেন উদার এবং সম্মানীয় ব্যাক্তি। তাঁরা কখনই সম্মানের খেলাপ করেননি, রাসুল (সঃ) এর মতন মানুষও না।

অবশ্যই সকল মানুষ এমন নয়। কিছু মানুষ শুধুমাত্র অপমান এবং অসম্মানের ক্ষেত্রে সাড়া দিত, যেমন ফেরাউন, সূরা আজ-জুকরুফের ৫৪ নম্বরের আয়াতে বলা হয়েছে, "অতঃপর সে তার সম্প্রদায়কে বোকা বানিয়ে দিল, ফলে তারা তার কথা মেনে নিল নিশ্চয় তারা ছিল পাপাচারী সম্প্রদায়"

শুধুমাত্র দয়ালু মানুষ তো তারাই, যারা সত্য ও সদগুণের ডাকে সাড়া দেন। শুধুমাত্র তাঁরাই এতে বিশ্বাস করবে এবং শক্তি ও সাহসের সাথে তা পালন করবে। সেই সব লোকদের লক্ষ করে আমাদের ইসলামের দাওয়াত দিতে হবে এবং তাদের আচরণ অনুযায়ী প্রাপ্য ফল তাদের জানাতে হবে। আর যাদের হৃদয়ে কোন মঙ্গল নেই, তারা এই ডাকে সাড়া দেবে না এবং তাদের প্রতি আমাদের সময় নষ্ট করা উচিৎ হবে না।

কিছু মানুষ উদার এবং সহনশীল শব্দের দ্বারা মানুষকে খারাপ ও দুর্নীতির রাস্তায় আহ্বান করে, কিন্তু আল্লাহ্‌ শুধুমাত্র তাদের সাথেই আছেন যারা সত্যের ডাক দেন এবং তাঁরা সত্যি ভাগ্যবান যারা সত্যের আহ্বান জানান আল্লাহ্‌র বর্ণিত পন্থায়।

সৌন্দর্য এমন একটি গুণ যার জন্য আমরা আকাঙ্ক্ষিত এবং উন্মুখ হয়ে থাকি। এটি সদগুণ এবং সত্যের মতই গুরুত্বপূর্ণ। সৌন্দর্য দ্বারা গঠিত এমন কাজ যা মানুষকে দুর্নীতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় এবং আমাদের নৈতিকতা ও নীতিকে অবমাননা করে এগুলো ব্যাতিত আমাদের সৌন্দর্যকে উপভোগ করার প্রতিটি সুযোগ গ্রহণ করা উচিত। এছাড়া সৌন্দর্যকে এড়িয়ে যাওয়া উচিত।

আমাদের নিষেধ করা হয়েছে কিছু ছবির প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করা থেকে যা সুন্দর হতে পারে এবং নিষেধ করা হয়েছে কিছু সুন্দর কণ্ঠস্বর শুনতে। কারণ এ ধরনের সৌন্দর্য ধোঁকা দিতে পারে নৈতিক আচরণকে। এ কারণেই মহিলাদের সৌন্দর্যকে সংরক্ষিত করতে বলা হয়েছে তাদের স্বামী এবং নির্দিষ্ট কিছু আত্মীয় স্বজনদের জন্য। এভাবে এটি অসম্মানিয় আচরণের দিকে মানুষকে পরিচালিত করা থেকে বিরত রাখে স্বামীরা তাদের স্ত্রীদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে এবং তা উৎসাহিত করতে পারে, এটি কোন নিষিদ্ধ আচরণ নয় বরং এটি নৈতিক অধঃপতন রোধ করতে পারে।  

সুন্দর কণ্ঠস্বর নির্ভর করে কথার ধরনের উপর, যা প্ররোচিত করতে পারে অনৈতিক কার্যকলাপকে। মাঝে মাঝে মহিলাদের নরম কণ্ঠ পুরুষদের উত্তেজিত করতে পারে। রাসুল (সঃ) এর স্ত্রীদের নিয়ে সূরা আল আহযাবের আয়াত ৩২ এ বলা হয়েছে, "হে নবী পত্নীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও; যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে"

কিছু সুর এবং গানের বেলায়ও একই কথা প্রযোজ্য। সুরা লোকমানের আয়াত ৬ এ আমাদের বলা হয়েছে, "একশ্রেণীর লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গোমরাহ করার উদ্দেশে অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে অন্ধভাবে এবং উহাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে এদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি ইবনে মাসুদ (রাঃ) মতে অবান্তর কথাবার্তার ব্যাপারে বলেন, “আল্লাহর কসম তা হল গান গাওয়া।”
 
আমরা কৃতজ্ঞ যে, আল্লাহ্‌ আমাদের সত্যের পথে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন,আমাদের জন্য সদগুণের রাস্তা দেখিয়েছেন এবং বর্ণনা করেছেন কথা, কাজ এবং অর্থের সৌন্দর্যের গুরুত্ব। 


মূল লেখাঃ ড. জাফর শেইখ ইদরিস 
অনুবাদঃ আল মালহামা অনুবাদক টিম কতৃক অনূদিত