কে ছিল উমার –আল-খাইয়াম আর
কী ছিল তার বিশ্বাস?? ইনশাআল্লাহ
আশা করি তার সম্পর্কে কিছু তথ্য জানতে পারব এই আলোচনায় ।
সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ সুবহানুওয়া তাআলার ।
সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ সুবহানুওয়া তাআলার ।
তার পুরো নাম আবুল ফাতহ উমার ইবন ইব্রাহিম আল খাইয়ামি আল নয়াসপুরি । সে জন্মগ্রহন করে নয়াসপুরে এবং মৃত্যু হয় সেখানে । সে নয়াসপুরের মানুষের মধ্যে একজন কবি এবং দার্শনিক হিসেবে পরিচিত
ছিল ।
নয়াসপুরের শহরে ৪০৮ হিজরিতে জন্মলাভ করেছিলেন
এবং ৫১৭ হিজরি সালে একই শহরে তার মৃত্যু হয়েছিল
আর সেখানেই তাকে দাফন করা হয়
। অবশ্য কেউ কেউ বলেন তার উনার মৃত্যু হয়েছিল
৫১৫
হিজরিতে ।
উমার আল খাইয়াম
একজন পন্ডিত ছিল আর তার পান্ডিত্য ছিল গনিত, জ্যোতির্বিদ্যা, ভাষা, ফিকহ ও
ইতিহাস শাখায় ।
জ্যোতির্বিজ্ঞানী হিসেবে তার প্রখর বুদ্ধিমত্তার কারনে,
তার বাগদাদে মানমন্দিরের
পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়
এবং দর্শনশাস্ত্রে তার আগ্রহের কারনে তার নাম সংযুক্ত
করা হয়
ইবনে সিনার সাথে। তার লিখা আর্টিকেল গুলো কুফরে পরিপুর্ণ যা
তাকে ইসলামের গন্ডির বাইরে নিয়ে যায়।
সে তার কবিতার
জন্যও ছিল বিখ্যাত, আল-রুবাইয়াত
হচ্ছে সবচেয়ে প্রচলিত কবিতা যেটা কুফরি, অবাধ যৌনাচার
এবং খারেজী মতামতে ভরপূর । এতে অবাক হবার কিছু নেই যে, পশ্চিমারা ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে এই
বইটি প্রকাশ করার ও বিতরনের দায়িত্ব নিল । এটি বেশ কয়েকটি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল তারমধ্যে উল্লেখ্য ইংরেজী, ফ্রেঞ্চ, রাশিয়ান, জার্মান
ইত্যাদি । বিট্রিশরা আল
খাইয়াম এর
আল-রুবাইয়াত
এর নাম দিয়ে প্রকাশ করতে চেয়েছিল এই পাপাচার,
অনৈতিকতা, ও নির্বিচার যৌনতা ।তাই তারা যেখানেই উপনিবেশ স্থাপন করেছিল সেখানেই এটা ছড়িয়ে দিল যেমন ইন্ডিয়া, ইরান আর তারা এটাকে তারা যা চায় অথবা তাদের গুরুত্বপূর্নদের একজনের
পরিবর্তে, একজন মুসলিমের প্রতীক হিসেবে সংযুক্ত করল ।
আল-রুবাইয়াত এ
মদ নিয়ে একটা শ্লোকে বলা হয়েছেঃ
মদ পান কর আত্নার বিনোদনের
জন্য
বিনোদন হচ্ছে শরীর ও মনের চিকিৎসা
বিনোদন হচ্ছে শরীর ও মনের চিকিৎসা
যদি তুমি দুঃখ কষ্টে নিমজ্জিত হও
রক্ষা কর
নিজেকে ইহার
(মদ) মাধ্যমে, এটা নূহ এর জাহাজের মত
মৃত্যু পর
পূনরূথান এর
বিশ্বাস কে
অস্বীকার করে সে বলেছেঃ
মৃত্যু তোমাকে পাকড়াও করার আগেই জেগে উঠ
এবং গ্রহন কর মদ (গোলাপী
রং এর) অন্ধকারকে বিতাড়িত করতে
আরে বোকা!
তুমি তো
স্বর্ণের কোন টুকরা নও
যে তোমাকে সমাহিত করা হবে এবং পরে তোমাকে আবার দন্ডায়মান করানো হবে
পাপাচার, অনৈতিকতা, ও ঊচ্ছৃংখল যৌনতা নিয়ে তার কথাগুলোঃ
যতখানি পার তুমি অনুসরন কর
দুশ্চরিত্র লোকদের
নষ্ট কর
সালাত ও
সিয়ামের গঠন
আল-খাইয়াম
থেকে সবচেয়ে ভাল শব্দগুলি গ্রহন কর
খাও, গাও এবং খোজ/অনুসন্ধান কর
ভাল কিছু
শরীয়াহ নিয়ে তার উপহাস, আল্লাহর
প্রতি তার ওদ্ধত্যপূর্ন আচরণ এবং তওবার প্রতি তার দৃষ্টিভঙি নিচের লাইনগুলোতে বোঝা যায়ঃ
প্রতিদিন আমার তওবা করার ইচ্ছে হয়
যদি রাত শেষ হয়ে যায় তখন আমি উপলব্ধি করি যে আমি মদ্যপান থেকে তওবা করতে চায়
যদি রাত শেষ হয়ে যায় তখন আমি উপলব্ধি করি যে আমি মদ্যপান থেকে তওবা করতে চায়
তারপর যখন ফুলের ঋতু আসে তখন
আমি বলি ও আল্লাহ, আমি তওবা করছি আমার তওবা (পূর্বের) করার ইচ্ছে থেকে
কিছু শায়খ যেমন আল-জারকালি বলেছেন
যে, পরে সে তওবা করেছিল এবং হাজ্জ্ব করেছিল ।
আবার কেউ কেউ (শায়খ) সন্দেহ
প্রকাশ করেছেন আল-রুবাইয়াত আসলে তার লিখা কিনা তাদের মধ্যে আবদ আল-হাক্ক ফাদিল একজন ।
ঘটনা যাই হোক, রুবাইয়াত এ
কোন নিদর্শন নেই যে সে
তওবা করেছিল । কারন এটা স্পষ্ট কুফরী মতবাদ ধারন করে,
ইচ্ছাকৃতভাবে অবজ্ঞা এবং প্রত্যাখান করা হয়েছে পবিত্র তওবাকে আর আল্লাহর দিকে ফিরে আসার বিষয়কে ।
প্রকৃতপক্ষে, এটাতে কোন নিদর্শন নেই যে লেখক আল্লাহ এবং কিয়ামত দিবস কে বিশ্বাস করত ।
তার জীবন সম্পর্কে আরো তথ্য জানার জন্য দেখুন কিতাব আল-জারকালির লেখা আল-আলাম 5/38; উমার রিদা কাহহালাহর লেখা মুজাম আল-মূয়ালিফিন 2/549; ইহসান হাক্কির লেখা আল-কুফর ওয়াল ঈমান; আবদ আল-হাক্ক ফাদিল এর লেখা থাওরাত আল-খাইয়াম ।
মূল লেখাঃ শাইখ সালেহ আল মুনাজ্জিদ